Capacitors & Capacitance
বিষয়:বেসিক ইলেকট্রিসিটি
Part- 8
ক্যাপাসিটর এবং ক্যাপাসিট্যান্স (Capacitors & capacitance)ঃ
ক্যাপাসিটর
এবং ক্যাপাসিট্যান্সের সংজ্ঞা (Definition of capacitors and capacitance)ঃ
ক্যাপাসিট্যান্সের সংজ্ঞা বলার আগে ক্যাপাসিটর কী, তা জানা
প্রয়োজন।
ক্যাপাসিটর
(Capacitor)ঃ
দুটি সমান্তরাল পরিবাহী পরস্পর কোন অপরিবাহী
পদার্থ দিয়ে পৃথক হলে একটি ক্যাপসিটর গঠিত হয়।
ক্যাপসিটরকে কনডেনসারও বলা হয়।
ক্যাপাসিটরের পরিবাহী দুটিকে ইলেকট্রোড বা প্লেট
এবং অপরিবাহী পদার্থকে 'ডাই-ইলেকট্রিক' বলে ।
ক্যাপাসিটরের প্লেট দুটির মধ্যে যখন পটেনশিয়াল পার্থক্য
বিরাজ করে, তখন ক্যাপাসিটরটি 'চার্জড
(Charged) বলা হয়।
যখন প্লেট দুটির মধ্যে কোন পটেনশিয়াল পার্থক্য থাকে না,
অর্থাৎ শূন্য থাকে, তখন ক্যাপাসিটরটি ডিসচার্জড (Discharged) বলা হয়।
ক্যাপাসিটর বা কনডেনসারের উদ্দেশ্য ‘ডাই-ইলেকটিক' বা অপরিবাহী
পদার্থের ভিতর ইলেকট্রোস্ট্যাটিক চাপের সাহায্যে শক্তি (Energy) সঞ্চয় করে রাখা।
ক্যাপাসিট্যান্স
(Capacitance)ঃ
ক্যাপাসিটরের প্লেটগুলোর মধ্যে যখন পটেনশিয়াল পার্থক্য
বিরাজমান থাকে, তখন এতে বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয় করে রাখা ক্যাপাসিটরের একটি বিশেষ
ধর্ম, এই বৈশিষ্ট্য বা ধর্মকেই ক্যাপাসিট্যান্স(Capacitance) বলে।
ক্যাপাসিটরে বিদ্যমান চার্জ এবং এর প্লেটগুলোর মধ্যেকার
পাটেনশিয়াল- পার্থক্যের অনুপাতের সাহায্যে ক্যাপাসিট্যান্স পরিমাপ করা হয় । এর প্রতীক C ।
সংজ্ঞানুসারে,
C
= Q ÷ V
এখানে Q = চার্জের পরিমাণ (কুলম্ব)।
V = পটেনশিয়াল পার্থক্য (ভোল্ট) ।
ক্যাপাসিট্যান্সের একক (The unit of capacitance)ঃ
এস. আই, পদ্ধতিতে ক্যাপাসিট্যান্সের একক হল ফ্যারাড (বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডের নামানুসারে)।
এক ভোল্ট
বিভব-পার্থক্যের জন্যে ডাই-ইলেকটিকে যদি এক কুলম্ব ইলেকট্রিক চার্জ সঞ্চিত হয়, তবে
উক্ত ক্যাপাসিট্যন্সকে এক
ফ্যারাড বলে।
ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটরের মান এক ফ্যারাডের এক মিলিয়ন
ভাগের এক ভাগ বা তার চেয়েও কম। কারণ এসব
ক্যাপাসিটরে মাইক্রো-কুলাম্ব বা তার চেয়েও কম চার্জ জমা করতে পারে
। সে কারণে এর সাধারণ এককগুলো হল
1 মাইক্রোফ্যারাড (uF) = 1 x 10^-6 F.
1 পিকোফ্যারাড (pF) = 1 x 10^-12 F.
ক্যাপাসিটরের
শ্ৰেণিবিভাগ এবং ব্যবহার (Different types of capacitors and their uses ) ঃ
ইনপুলেটিং ম্যাটেরিয়াল বা পদার্থ, অথবা ডাই-ইলেকট্রিকের ভিত্তিতে ক্যাপাসিটরকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়, যথাঃ
১। এয়ার (Air) ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর।
২। মাইকা (Mica) ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর ।
৩। পেপার (Paper) ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর।
৪। পলিস্টাইরিন
(Polystyrene) ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর।
৫। সিরামিক (Ceramic)
ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর।
৬ । ইলেকট্রোলাইটিক (Electrolytic) ক্যাপাসিটর, ইত্যাদি।
১।
এয়ার ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর (Air Dielectric Capacitor)ঃ দু'
সেট পিতল বা অ্যালুমিনিয়ামের
প্লেট দিয়ে এটা তৈরি
করা হয়।
একসেট প্লেট ফাক ফাক করে সাজিয়ে এবং প্যারালেলে সংযুক্ত করে দৃঢ়ভাবে একটি অপরিবাহী
কাঠামোতে বসানো থাকে। অনুরূপভাবে নির্মিত প্লেটের দ্বিতীয় সেটটি বিয়ারিংসহ একটি
শ্যাফটে বসানো থাকে । যখন শ্যাফটটি ঘুরানো হয়, তখন এর প্লেটগুলো কাঠামোর
প্লেটগুলোর ফাকে ফাকে ঢুকে যায়; ফলে মোট ক্যাপাসিট্যান্স বৃদ্ধি পায়। এভাবে
শ্যাফটটি ঘুরে কাতিক্ষত সঠিক ক্যাপাসিট্যান্স পাওয়া যায় ।
ব্যবহার (Uses)ঃ উদাহরণ হিসেবে রেডিওতে ব্যবহৃত
গ্যাংগ (Gang) ক্যাপাসিটরের কথা বলা যায় ।
২।
মাইকা ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর (Mica Dielectric Capacitor)ঃ মাইকা এবং ধাতুর পালা পাত পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে শক্তভাবে
আটকিয়ে এটা তৈরি করা হয় ।
ব্যবহার (Uses)ঃ
উচ্চ মূল্যের কারণে এর ব্যবহার সীমিত । শুধুমাত্র উচ্চফ্রিকুয়েন্সি সার্কিটে
ব্যবহৃত হয়। এটা 'গ্রাহক এবং প্রেরক যন্ত্রের আর. এফ (R.F) সার্কিটে প্রধানত
ব্যবহৃত হয় ।
৩।
পেপার ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর (Paper Dielectric Capacitor)ঃ
এটা টিনের পাতলা পাত এবং (আদ্ৰতা দূর করার জন্যে) তেল বা মোম মিশ্রিত
কাগজ একত্রে পাকিয়ে তৈরি করা হয়। এটা অনেক সময় ধাতব আবরণের ভিতর বসানো থাকে ।
ব্যবহার (Uses) ঃ এটা
প্ৰধানতঃ AF (Audio-Frequency) অ্যামপ্লিফায়ার সার্কিটে এবং পাওয়ার সাপ্লাই -এ ব্যবহৃত হয়।
৪।
প্লাষ্টিকফিল্ম ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর (Plastic-film Dielectric Capacitor) ঃ এই
ধরনের ক্যাপাসিটরে কাগজের (Paper) পরিবর্তে প্লাস্টিকের অত্যন্ত
পাতলা শীট (Film) ব্যবহার করা হয় । পেপার ডাই-ইলেকট্রিক ক্যপাসিটরের ন্যায় এটা তৈরি
করা হয় । প্লাস্টিক ফিল ডাই-ইলেকট্রিকও আবার কয়েক ধরনের হয়,
যথাঃ পলিস্টাইরিন (Polystyrene), পলিয়েস্টার (Polyester), পলিকারবোনেট (Poly-carbonate) এবং
পলিপ্রোপাইলিন (Poly-propylene)।
৫।
সিরামিক ডাই-ইলেকট্রিক ক্যাপাসিটর (Ceramic Dielectric
Capacitor)ঃ সিরামিক
পদার্থের [যেমন Hydrous Silicate of Magnesia)] পাতলা প্লেট বা চাকতির (Dise) দু' পাশে ধাতুর (সাধারণতঃ রূপা) প্রলেপ দ্বারা ইলেকট্রোড গঠিত হয়।
ব্যবহার (Uses)ঃ এটা প্ৰধানতঃ উচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি সার্কিটে বিশেষতঃ
তাপমাত্রার পরিবর্তন যেখানে ব্যাপক, সেখানে ব্যবহৃত হয়।
৬। ইলেকট্রোলাইটিক
ক্যাপাসিটর (Electrolytic capacitor)ঃ এই ধরনের ক্যাপাসিটরের একটি ইলেকট্রোড
অ্যালুমিনিয়ামের এবং অন্যটি ইলেকট্রোলাইটিক
সলুশনের (সাধারণতঃ অ্যামোনিয়া, বরিক এসিড এবং পানির সংমিশ্রণ) তৈরি ।
ক্যাপাসিটরটির ভিতর দিয়ে যখন কারেন্ট প্রবাহিত হয়, তখন অ্যালুমিনিয়ামের
প্লেটটির উপর অক্সাইডের একটি পাতলা আস্তর পড়ে এবং উক্ত আস্তরণটিই ‘ডাই-ইলেকট্রিক হিসেবে কাজ করে।
এই ধরনের ক্যাপাসিটরে ('+') এবং'( - )' চিহ্নিত থাকে, যাতে প্রয়োগকৃত
ভোল্টেজের (+), ক্যাপাসিটরের (+) -এ সংযোগ করা যায়। ফলে 'ডাই-ইলেকট্রিকের পাতলা আস্তরণটি রক্ষা পায়। না হলে উল্টা
সংযোগের ফলে উল্টাদিকে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার কারণে রাসায়নিক বিক্রিয়াও উল্টা
হবে, তাতে ‘ডাই-ইলেকট্রিক' ধ্বংস প্রাপ্ত হবে এবং ক্যাপাসিটরটি শর্ট সার্কিট হবে ।
ব্যবহার (Uses)ঃ যেখানে উচ্চ মানের ক্যাপাসিট্যাগের প্রয়োজন, সেখানে এই ক্যাপাসিটর
ব্যবহৃত হয়। সাধারণত রেকটিফায়ারে ভোল্টেজ তরঙ্গে মৃদু
উথান- পতন দূরীকরণার্থে।
ক্যাপাসিটরের
সিরিজ সংযোগের সমতুল্য মান (The equivalent capacitance of capacitors connected
in series) ঃ
যখন ক্যাপাসিটরসমূহ প্রান্ত হতে প্রান্তে সংযোগ করা হয়, তখন একে সিরিজ সংযোগ বলা হয়।
মনে করি, C1, C2, C3 তিনটি ক্যাপাসিটর সিরিজে পটেনশিয়াল পার্থক্য
V ভোল্টের আড়াআড়িতে সংযোগ করা হল । V1, V2, V3 পটেনশিয়াল পার্থক্য প্রতিটি ক্যাপাসিটরের
আড়াআড়িতে ধরা হল ।
যেহেতু, Q = CV
★ V = Q ÷ C
সেরুপে, V = Q ÷ C1
V = Q ÷ C2
V = Q ÷ C3 [যখন সবগুলোতে
চার্জ একই থাকে ]
সিরিজে, V = V1 + V2 + V
★(Q÷Cs) =
(Q÷C1)+(Q÷C2)+(Q÷C3)
= Q[ (1÷C1)+(1÷C2)+(1÷C3) ]
অথবা, (1÷Cs) = (1÷C1)+(1÷C2)+(1÷C3)
এখানে Cs = সিরিজে মোট ক্যাপাসিট্যান্স ।
সিরিজে কার্যকরী ক্যাপাসিট্যাল কমে যায়।
ক্যাপাসিটরের প্যারাসেল সংযোগে সমতুল্য
মান (
The equivalent capacitance of capacitors connected in parallel ) ঃক্যাপাসিটরসমূহ প্যারালেল - ভাবে বিন্যস্ত হয় তখন , যখন এদের সবগুলোকে একই পটেনশিয়াল পার্থক্যের আড়াআড়িতে সংযোগ করা হয়।
মনে করি ,
C1 , C2, C3 ,
প্রতিটি ক্যাপাসিটরে সঞ্চিত চার্জ যথাক্রমে Q1 , Q2 , Q3
আমরা জানি ,
Q = CV
★ Q1 = C1 V
Q2 = C2 V
Q3 = C3 V
অতএব, Q =
CpV [Cp = প্যারালেলে কার্যকরী ক্যাপাসিট্যান্স ।]
যেহেতু, Q =
Q1 + Q2 + Q3
CpV = C1 V +
C2 V + C3 V
CpV = [ V ( C1 + C2 + C3 )
★ Cp = C1 + C2 + C3
এখানে লক্ষণীয় যে , প্যারালেলে কার্যকরী ক্যাপাসিট্যান্স
বৃদ্ধি পায় ।
ক্যাপাসিটরে শক্তি সঞ্চয় (The energy stored in
a capacitor) ঃ
একটি ক্যাপাসিটর চার্জিং-এর সময় কিছু না কিছু শক্তি ব্যয় হয়। এই শক্তি ডাই-ইলেকটিকএ
ইলেকট্রোস্ট্যাটিক-ক্ষেত্রে সঞ্চিত থাকে। ক্যাপাসিটর ডিসচার্জিং -এর সময় এই ক্ষেত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, ফলে
সঞ্চিত শক্তি মুক্ত হয়। যখন
ক্যাপাসিটরটি চার্জমুক্ত
হয়, তখন সে সময় হতে শুরু করলে চার্জ এক প্লেট হতে অন্য প্লেটে স্থানান্তরিতের
সময় সামান্য কার্য সম্পন্ন হয় । কিন্তু চার্জ আরো বৃদ্ধি করতে ক্যাপাসিটর প্লেটে পূর্ব-সঞ্চিত চার্জের বিকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।
C ক্যাপাসিট্যান্স মানের একটি ক্যাপাসিটরকে V ভোল্টেজে চার্জ
করলে যে শক্তি ব্যয় হবে, আমরা এটা নির্ণয় করব।
মনে করি, যে-কোন মুহুর্তে চার্জ হবে ' q 'এবং দুটি প্লেটের মধ্যে পটেনশিয়াল
পার্থক্য = V
'q' চার্জ হতে বৃদ্ধি করে (q+dq)-এ আনতে কার্য সম্পাদিত হবে
= V. dq
অর্থাৎ dw = V. dq
কিন্তু q
= CV
যেহেতু dq = C.dv
dw = CV. dv
পটেনশিয়াল পার্থক্য 0 হতে v -তে বৃদ্ধি করতে মোট কার্য
সম্পাদিত হবে,যদি C ফ্যারাড -এ এবং V ভোল্টে
প্রকাশ করা হয়,
তবে W =( 1÷2 ) CV^2 জুলস।