Electro-Magnetic Inducton
বিষয়:বেসিক ইলেকট্রিসিটি
Part- 12
ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ইনডাকশন (Electro-Magnetic Inducton)ঃ
ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক
ইনডাকশন কী (What is electromagnetic
induction)ঃ
এটা পরীক্ষামূলকভাবে দেখানো যেতে পারে যে,
একটি পরিবাহীকে একটি চৌম্বক-ক্ষেত্রে আলোড়িত করে বিদ্যুচ্চালক বল (Electromotive Force) উৎপন্ন করা যায়। ১৮৩১ খৃষ্টাব্দে বৃটিশ পদার্থ ও রসায়নবিদ মাইকেল
ফ্যারাডে এই মূল তত্ত্ব আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন।এই ঘোষণা
বিদ্যুৎএর ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা । যেহেতু এটা বৈদ্যুতিক জেনারেটর, মোটর, ট্র্যান্সফরমার এবং অসংখ্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির উন্নয়নে সরাসরি
চালিত করে ।
আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল (Induced Electromotive Force)ঃ
উপরের চিত্রানুযায়ী যদি একটি পরিবাহীর
প্রান্তদ্বয় একটি ভোটমিটারের সাথে সংযোগ এবং একটি চৌম্বক-ক্ষেত্রে আন্দোলিত করা
হয়, তবে ভোল্টমিটারে একটি ক্ষণিক পাঠ দেখা যাবে । যদি পরিবাহীটিকে চৌম্বকক্ষেত্র
হতে সরানো হয়, তবে মিটারটি ক্ষণিকের তরে উল্টা
পাঠ দিবে । পরিবাহীটি যখন গতিতে থাকে, তখনই মিটারটির বিক্ষেপ (Deflection) লক্ষ
করা যায় । যদি পরিবাহীকে স্থির রাখা হয় এবং চুম্বকটিকে ঘুরানো হয়, যাতে চৌম্বক
বল-রেখাগুলো পরিবাহী কর্তৃক কর্তিত হয়, তখনও একই ফল লক্ষ করা যায় । আবার,
বিক্ষেপ শুধুমাত্র তখনই লক্ষণীয়, যখন পরিবাহী এবং চৌম্বক-ক্ষেত্রের মধ্যে
আপেক্ষিক গতি (Relative mation) বিদ্যমান থাকে । মোটকথা, যখন কোন পরিবাহী
চৌম্বক-ক্ষেত্রের ভিতর বা চৌম্বক-ক্ষেত্রে পরিবাহীর আড়াআড়িতে ঘুরানো বা আলোড়িত করা
হয়, তখন পরিবাহীতে একটি ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়। এটাই আবেশিত
বিদ্যুচ্চালক বল বা Induced Electromotive Force (E. M. F) নামে পরিচিত। এই
আবেশিত বা Induced emf -এর কারণে পরিবাহীতে যে কারেন্ট প্রবাহিত হয়, একে আবেশিত বা Induced কারেন্ট বলে এবং যে প্রক্রিয়ার
সাহায্যে
পরিবাহীতে
ই . এম. এফ বা Induced আবেশিত হয় একে বিদ্যুচ্চৌম্বক আবেশ বা Electromagnetic Induction বলে ।
• বিদ্যুচ্চালক বলের
পরিমাণ বৃদ্ধির
কারণসমূহ (Causes
of increasing of electromotive force) ঃ
১। আবেশিত (Induced) ই. এম. এফ.-এর পরিমাণ বৃদ্ধি,
তারের প্যাচের সংখ্যার সাথে সরাসরি সমানুপাতিক; অর্থাৎ তারের প্যাচের সংখ্যা যত
বেশি হবে, ই. এম. এফ. -ও তত বেশি আবেশিত হবে। অর্থাৎ e ~ Z.
২। আবেশিত ই. এম.
এফ.-এর পরিমাণ বৃদ্ধি, তারের ঘূর্ণনের গতির সাথে সরাসরি সমানুপাতিক; অর্থাৎ
চৌম্বকক্ষেত্রে তারের ঘূর্ণনের গতি যত বৃদ্ধি
পাবে, ই. এম. এফ. -ও তত বেশি আবেশিত হবে। অর্থাৎ e ~ N.
৩। ই. এম. এফ.-এর
পরিমাণ বৃদ্ধি, চৌম্বকক্ষেত্রের শক্তির সাথে সরাসরি সমানুপাতিক; অর্থাৎ চৌম্বক
ক্ষেত্র যত বেশি শক্তিশালী হবে, বলরেখাও তত বেশি হবে। প্রতি সেকেন্ডে বল-রেখা দ্বারা যত
বেশি তার কর্তৃক কর্তিত হবে, ই.এম.এফ.-ও তত বেশি আবেশিত হবে ।
ফ্যারাডের ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ইনডাকশন সূএ (Faraday’ laws of electromagnetic induction )ঃ
উপরোক্ত কারণসমূহ লক্ষ করে মাইকেল ফ্যারাডে দুটি সূত্র উদ্ভাবন করেন।
প্ৰথম সূত্ৰ (First Law)ঃ একটি তার বা করেলে ই. এম. এফ, আবেশিত (Induced) হয়, যখন উক্ত তারের সাথে ফ্লাক্স
বা বলরেখার পরিবর্তন ঘটে।
দ্বিতীয় সূত্র
(Second Law)ঃ আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল বা Induced
E. M. F. সরাসরি ফ্লাক্স এর পরিবর্তনের হারের সাথে সমানুপাতিক।
উপরোক্ত দু'টি সূত্রকে একত্রে এভাবে প্রকাশ করা যায়,
একটি পরিবাহী এবং একটি চৌম্বক-ক্ষেত্রে যখন আপেক্ষিক
গতি (Relative motion) এরুপভাবে বিদ্যমান
থাকে যে পরিবাহীটি
চৌম্বক-ক্ষেত্রটিকে কর্তন করে; তখন পরিবাহীতে আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল (Induced E. M. F) সংঘটিত কর্তনের হারের সাথে সমানুপাতিক।
গাণিতিকভাবে, যদি
e = আবেশিত বিদ্যুচ্চালক
বল ( Induced E. M. F. )
N = তারের প্যাঁচের সংখ্যা ( No. of turns of Conductor )
যেহেতু এটা আরও লক্ষ করা গিয়েছে যে, আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বলের দিক-নির্দেশ এমন যে, এটা পরিবর্তনকে বাধা দেয়। সে কারণে উপরোক্ত সমীকরণের দক্ষিণ-পক্ষে একটি বিয়োগচিহ্ন দেয়া হয় ।
এম.কে .এস. বা এস. আই পদ্ধতিতে ¢-এর মান ওয়েবারে প্রকাশ করা হয় এবং
গতিশীল এবং স্হিরভাবে উৎপাদিত ই. এম. এফ (The magnitude of dynamically induced emf and statically induced emf)ঃ
আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল দুভাবে
উৎপাদিত হয়, যথাঃ
১। গতিশীল পদ্ধতি
(Dynamical Method)।
২। স্হির পদ্ধতি (Static Method)।
গতিশীল পদ্ধতিঃ
সর্বোচ আবেশিত ই. এম. এফ ঃ
এ পদ্ধতিতে পরিবাহী একটি স্থির চৌম্বক-ক্ষেত্রে নড়াচড়া করে । এই নীতি ডি.সি. মেশিনে ব্যবহৃত হয় ।
১ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি
পরিবাহীর-প্রস্থচ্ছেদ চিত্রে দেখানো হয়েছে
A স্থানে দেখানো হয়েছে, যা B ফ্লাক্স-ডেনসিটির H ক্ষেত্রে
থিটা ডিগ্রি কোণে ঘুরছে।
মনে করি, এটা dt সেকেন্ড সময়ে dx সেন্টিমিটার স্থান সরছে ।
H-কে দু'ভাগে বিশ্লিষ্ট করা হল-
পরিবাহীর দৈর্ঘ্য বরাবর H cos থিটা এবং লম্ব বরাবর H
sine থিটা.
উপরোক্ত চিত্রে আমরা দেখছি যে, কেবলমাত্র H sine থিটা উপাদানটি পরিবাহীটিকে কর্তন করছে এবং এই উপাদানটিই পরিবাহীতে
বিদ্যুচ্চালক বল (ই.এম.এফ.) সৃষ্টির জন্যে দায়ী
।
যদি পরিবাহীটি চৌম্বক-ক্ষেত্রে সমকোণে ঘুরে অর্থাৎ থিটি = 90° হয়, তবে সর্বোচ্চ ই.
এম.
এফ.
আবেশিত
হবে
e = Blv Volt. [sin থিটা 90° = 1]
স্হির
পদ্ধতিঃ
এ পদ্ধতিতে একটি পরিবর্তনশীল চৌম্বক ক্ষেত্রে পরিবাহী স্থির থেকে বিদ্যুচ্চালক
বল উৎপন্ন করে। এই নীতি ট্র্যান্সফরমারে ব্যবহৃত হয়।
• লেনজের সূত্র (Lenz's Law)ঃ আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বলের (Emf) কারণে পরিবাহী তারে প্রবাহিত
আবেশিত কারেন্ট (Induced current ) পরিবাহী তারের চতুপার্শ্বে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে, যা যারা আবেশিত কারেন্টের উৎপত্তি, উহাকেই
(অর্থাৎ পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স ) এ (অর্থাৎ সৃষ্ট চৌম্বক ক্ষেত্ৰ) বাধা প্রদান করে।
এই সূত্রটি রাশিয়ান বিজ্ঞানী এইচ. এফ. এমির লেন্জ (1808 - 1865) উদ্ভাবন
করেন বলে এটি লেনজের সূত্র (Lenzs Law) নামে খ্যাত ।
এখানে কারণটি,' যা কারেন্টকে সৃষ্টি করে উহা হল কয়েলের সাথে সংশ্লিষ্ট ফ্লাক্সের
পরিবর্তন। সুতরাংআবেশিত কারেন্টের অভিমুখ এমন হবে যে, এর নিজস্ব
চৌম্বকক্ষেত্র আবেশিত কারেন্টকে যে ফ্লাক্স সৃষ্টি করে, সে মূল ফ্লাক্সের
পরিবর্তনে বাধা প্রদান করে।
সেলফ ইনডিউসড
ই.এম.এফ এবং সেলফ ইনডাকট্যান্স (Self-induced emf and self- inductance) ঃ
সেলফ ইনডিউসড ই. এম. এফ
(self-induced em)ঃ
যখন কোন কয়েলে কারেন্ট পরিবর্তিত হয় অথবা পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স একই
কয়েলে সম্পর্কিত হয়, তখন উক্ত কয়েলে ই. এম. এফ. আবেশিত (Induced)
হয়। এই আবেশিত ই. এম. এফ-কে সেলফ
ইনডিউসড ই . এম, এফ. বলে এবং এই ফেনোমেনা বা ব্যাপারটিকে সেলফ ইনডাকশন বলে।
সেলফ ইনডাকট্যান্স (Self-inductance)ঃ
এটা কয়েলের এমন একটি বিশেষ ধর্ম যা কয়েলে প্রবাহিত কারেন্ট বা কয়েলের
চারদিকের ফ্লাক্সের হ্রাস বা বৃদ্ধিতে বাধা
দান করে।
সেলফ ইনডাকশনের একটি উদাহরণ হল অটোক্ল্যান্সফরমার।
মিউচুয়্যাল
ইনডাকট্যান্স এবং কো-ইফিসিয়েন্ট অব কাপলিং (Mutual inductance
and co-efficient of coupling)ঃ
মিউচুয়্যাল
ইনডাকট্যান্স-এর সংজ্ঞা (Definition of Magnetic inductance)ঃ
যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারণে পার্শবর্তী দুটি কয়েলের একটির কারেন্টের
পরিবর্তনের ফলে অন্যটিতে ভোল্টেজ আবিষ্ট বা ইনডিউসড হয়, উক্ত ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যকে মিউচুয়্যাল ইনডাকট্যান্স বলে।
• কো-ইফিসিয়েন্ট অব কাপলিং-এর
সংজ্ঞা (Definition of co-efficient of coupling) ঃ
পার্ববর্তী দুটি কয়েলের একটিতে প্রবাহিত কারেন্টের ফলে উৎপন্ন মোট ফ্লাক্সের যে ভগ্নাংশ অন্যটিতে সংশ্লিষ্ট হয়, উক্ত ভগ্নাংশকে কো-ইফিসিয়েন্ট অব কাপসিং বলে। এর প্রতীক k.
অতএব,
k = [( L1 এবং L2 -এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট ফ্লাক্স।) ÷ ( কর্তৃক
উৎপাদিত
ফ্লাক্স।)]