Breaking News

Magnetic circuits


বিষয়:বেসিক ইলেকট্রিসিটি
 Part-10
ম্যগনেটিক সার্কিট (Magnetic circuits) ঃ
ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স যে পথে গমন করে, উহাকে ম্যাগনেটিক সার্কিট বলা হয়।
যদিও চৌম্বক বল-রেখার গমন সর্বত্র, তবুও চৌম্বক পদার্থের (বিশেষ করে লোহা) মধ্য দিয়ে এর যাতায়াত বাধাহীন। চৌম্বক সার্কিট বহু দিক দিয়ে বৈদ্যুতিক সার্কিটের অনুরূপ । বৈদ্যুতিক সার্কিটের 'ওহমের সূত্র চৌম্বক সার্কিটের বেলায়ও প্রযোজ্য । বৈদ্যুতিক সার্কিটে সিরিজ ও প্যারালেল সার্কিট যেভাবে সমাধান করা হয়, চৌম্বক সিরিজ ও প্যারালেল সার্কিটও তেমনিভাবে সমাধান করা যায়।
তবুও এদের মধ্যে তিনটি প্রধান পার্থক্য বিরাজমান ।
১। এমন কোন জানা-পদার্থ নেই, যা দ্বারা ম্যাগনেটিক ফ্লাক্সের গতি রোধ করা যায়। সুতরাং ম্যাগনেটিক ফ্লাক্সের পস্পষ্টভাবে স্থির করা যায় না, যেভাবে বৈদ্যতিক সার্কিটে কারেন্টের পথ স্থির করা যায় । কাজেই চৌম্বক সার্কিটের মান নির্ণয়ে যথেষ্ট ভুল পরিলক্ষিত হয় ।
২। ম্যাগনেটিক সার্কিট প্রায়ই আকারে ছোট, কিন্তু জটিল বিধায় ফ্লাক্স পথের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থচ্ছেদ সঠিকভাবে নির্ণয় করা কষ্টকর।
৩। চৌম্বক পদার্থের পারমিয়্যাবিলিটি শুধুমাত্র পদার্থের বিভিন্নতার সাথে পরিবর্তিত হয় না বরং ফ্লাক্সের ঘনতার সাথেও পরিবর্তিত হয় । কিন্তু বৈদ্যুতিক সার্কিটে তাপমাত্রা ব্যতীত পরিবাহী-পদার্থের রেজিস্টিভিটি (আপেক্ষিক রেজিস্ট্যান্স) কারেন্টের ঘনতার (Density) সাথে পরিবর্তিত হয় না।
ম্যাগনেটাইজিং ফোর্স, ম্যাগনেটোমোটিভ ফোর্স, অ্যাপিয়ার টানস, রিল্যাকট্যান্স, পারমিয়েন্স, পারমিয়াবিলিটি, ম্যাগনেটিক লিংকেজ এবং লিকেজের সংজ্ঞা (Definition of magnetizing force, magnetomotive force, ampere turns, reluctance, permeance, permeability, magnetic linkage and leakage) ঃ
কম্যাগনেটাইজিং ফোর্স ঃ ম্যাগনেটিক ফিল্ড ইনটেনসিটি অথবা ম্যাগনেটিক ফিল্ড স্ট্রেংথ অথবা ম্যাগনেটাইজিং ফোর্স একই । এবং এর সংজ্ঞা পূর্বেই (অনুচ্ছেদ .২-এ) বর্ণনা করা হয়েছে।
ম্যাগনেটো-মোটিভ ফোর্স (এম. এম. এফ) (Magnetomotive force) ঃ
ম্যাগনেটিক সার্কিটের মধ্য দিয়ে ফ্লাক্স চালিত করার ঝোঁক বা প্রবণতাকে ম্যাগনেটোমোটিড ফোর্স (এম. এম, এফ.) বলে।
বা ফ্লাক্স উৎপন্ন করতে একটি কয়েলের কর্মক্ষমতার পরিমাপকে ম্যাগনেটোমোটিভ ফোর্স (এম. এম, এফ.) বলে।
ইলেকট্রিক সার্কিটে ই. এম. এফ. যেমন, ম্যাগনেটিক সার্কিটে এম. এম. এফ তেমন ।
এম. এম. এফ. সার্কিটের অ্যামপিয়ার- টানের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক। এর প্রতীক F
সি, জি, এস. পদ্ধতিতে এম. এম. এফ এর-একক গিলবার্ট এবং এস. আই , পদ্ধতিতে ‘অ্যামপিয়ার-টার্ন ।
অ্যামপিয়ার-টার্নকে 0.4π বা 1.257 দিয়ে গুণ করলে গিবার্ট পাওয়া যায় ।
অর্থাৎ F (mmf) = 0.4T IN
                          = 1.257 IN গিবার্ট।
অ্যামপিয়ার-টার্ন (AT) (Ampere turn)
এটা ম্যাগনেটো -মোটিভ ফোর্সের একক এবং ম্যাগনেটিক সার্কিটের তারের প্যাঁচ এবং এদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্টের গুনফলের সমান।
A T = IN
রিলাকট্যান্স (R ) (Reluctance)
ম্যাগনেটিক ফ্লাক্সের পথে বাধাকে রিলাকট্যান্স বলে।
অথবা, ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স প্রতিষ্ঠায় কোন পদার্থ প্রদত্ত  বাধাকে রিলাকট্যান্স (Reluctance) বলে।
এটা বৈদ্যুতিক সার্কিটের রেজিস্ট্যান্সের অনুরূপ । এর প্রতীক R.
সি. জি. এস. পদ্ধতিতে এর একক গিলবার্ট / ম্যাক্সওয়েল।
এস. আইপদ্ধতিতে অ্যাপিয়ার-টার্ন/ ওয়েবার।



পারমিয়্যান্স (P ) (Permeanace) ঃ

প্রতি একক ম্যাগনেটোমোটি ফোর্সের (এম, এম, এফ.) জন্যে উৎপাদিত মাক্সকে চুম্বক-পথের পারমিয়্যান্স ( Permeanace) বলে।
পারমিয়্যান্স বৈদ্যুতিক সার্কিটের কনডাকট্যান্সের অনুরূপ । এর প্রতীক P এবং এস. আই, পদ্ধতিতে একক ওয়েবার/অ্যামপিয়ার-টার্ন।



পারমিয়্যাবিলিটি (Permeability) ঃ অনুচ্ছেদ নং .৩-এ বর্ণিত অ্যাসলুট পারমিয়্যাবিলিটি এবং পারমিয়্যাবিলিটি একই। কাজেই এখানে এর সংজ্ঞা আর দেয়া হল না। ।

ম্যাগনেটিক লিংকেজ এবং লিকেজ (Magnetic linkage and Leakage)


ম্যাগনেটিক লিংকেজ (Magnetic Linkage) ঃ

কোন চৌম্বক ক্ষেত্রের নিকটবর্তী কোন চৌম্বক পদার্থ বা বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের কয়েল থাকলে, ঐ চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে উক্ত চৌম্বক পদার্থ বা কয়েলের মধ্যে একটি প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। এ চৌম্বক ক্ষেত্রকে ম্যাগনেটিক লিংকেজ বলা হয়।
(ক) নং চিত্রে দু'টি কয়েলকে পাশাপাশি দেখানো হয়েছেএকটিতে এ.সি
সরবরাহ করা হয়েছে এবং অপরটির দুপ্রান্ত খোলা। প্রথমটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে একটি চৌম্বকক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই চৌম্বক-ক্ষেত্রের বল-রেখা পার্শবর্তী কয়েলের উপর প্রভাব বিস্তার করছে। ফলে দ্বিতীয় কয়েলটিতে একটি ই. এম. এফ. এর সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রথম কয়েলটির চৌম্বক-ক্ষেত্রকে ম্যাগনেটিক লিংকেজ বলা যায়
ম্যাগনেটিক লিকেজ (Magnetic Leakage) ঃ
(খ) নং চিত্রে একটি চৌম্বককৃত লোহার রিং দেখানো হয়েছে, যাতে একটি ফাঁক আছে এবং এই ফাকের মধ্য দিয়ে। চৌম্বক বল-রেখা প্রবাহিত হতে দেখা যাচ্ছে। এই ফ্লাক্সকে ‘প্রয়োজনীয় ফ্লাক্স' বলে । এই ফাকের মধ্য দিয়ে সব ফ্লাক্স যেতে না পারায় কিছু কিছু ফ্লাক্স অন্যান্য স্থান দিয়েও প্রবাহিত হচ্ছে। তাই অনির্ধারিত পথে যাতায়াতকারী ফ্লাক্সকে ম্যাগনেটিক লিকেজ বলে ।
ম্যাগনেটোমোটিভ ফোর্স, রিলাট্যান্স এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ড ইনটেনসিটি অথবা ম্যাগনেটাইজিং ফোর্সের মধ্যে সম্পর্ক (The relation among magnetomotive force, reluctance and magnetic field intensity or magnetizing force) ঃ
(ক) ম্যাগনেটিক সার্কিটে ম্যাগনেটোমোটিভ ফোর্স (এম. এম. এফ), বৈদ্যুতিক সার্কিটের ই. এম. এফ. -এর মত।
(খ) ম্যাথনেটিক সার্কিটে রিলাকট্যান্স, বৈদ্যুতিক সার্কিটের রেজিস্ট্যান্সের মত ।
(গ) ম্যাগনেটিক সার্কিটে ম্যাগনেটিক ফিল্ড ইনটেনসিটি অথবা ম্যাগনেটাইজিং ফোর্স, বৈদ্যুতিক সার্কিটের কারেন্টের মত।
বৈদ্যুতিক সার্কিটে ওহমের সূত্রানুযায়ী,
             I = E ÷ R
অর্থাৎ কারেন্ট = ই. এম. এফ ÷ রেজিস্ট্যান্স ।
অনুরূপভাবে, ম্যাগনেটিক সার্কিটে
             H = F ÷ R
অর্থাৎ ম্যাগনেটাইজিং ফোর্স = ম্যাগনেটোমোটিভ ফোর্স ÷ রিলাকট্যান্স