Electric Current
বিষয়:বেসিক ইলেকট্রিসিটি
Part- 1
· বিদ্যুৎ এমন এক
অদৃশ্য বল বা শক্তি যা আলো,
তাপ, শব্দ , গতি উৎপন্ন করে এবং অসংখ্য বাস্তব কাজ সমাধা করে।
· বিদ্যুৎ বা
ইলেকট্রিসিটির উদ্ভব হয়েছে গ্ৰীক শব্দ ইলেক্রন (Elektron) বা ‘অ্যাম্বার (পাইন
গাছের শক্ত আঠাহতে । প্রাচীন
(অর্থাৎ খৃঃ পূঃ
৬৪০-৫৪৮ অব্দে) গ্ৰীক পঠিত থ্যালেস (Thales) লক্ষ করলেন যে, অ্যাম্বার (Amber) কে রেশমী
কাপড় দিয়ে ।
ঘষলে এটা কাগজের ছোট ছোট টুকরা আকর্ষণ করে । এখন যেমন আমরা " অনেকেই
লক্ষ করি যে, চিরুণি দিয়ে চুল আঁচড়িয়ে কাগজের ছোট ছোট টুকরার কাছে আনলে চিরুনি
টুকরাগুলো আকর্ষণ করে। ইদানিং পলিস্টার কাপড়ের শার্ট শরীর হতে খুলতে
গেলে চটুটু শব্দ হয় এবং শার্ট খুলে ফেলার পর শরীরের কাছাকাছি আনলে
শরীরের পশম টেনে নেয়, এমনকি অন্ধকারে শার্ট হতে
অফুিলিদও বের হতে দেখা যায়; বেশি দেখা যায় শুকনা মৌসুমে, বিশেষ করে
ফাগুন- চৈত্র মাসে। এগুলো আর কিছুই নয়,
বিদ্যুতের উপস্থিতির ফলেই এমনটি হয়ে থাকে।
· প্রয়োগের ফল (Etect of
Electric current): বিদ্যুৎ প্রবাহের
ফলে কী প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, নিচে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত
বিবরণ দেয়া হলো ঃ
1. তাপীয় ফল (Heating Efect)ঃপরিবাহীর মধ্য
দিয়ে যখন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, তখন পরিবাহীটি উত্তপ্ত হয় । ফলে
বৈদ্যুতিক শক্তির অপচয় ঘটে । এটা এভাবে বলা যায় যে, বৈদ্যুতিক শক্তি
তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় । এটাই বিদ্যুতের তাপীয়
বল বা Heating
efect.
. উদাহরণস্বরূপ
বলা যায়, বৈদ্যুতিক বাতি (বাল) হতে আলোর বিছুরণ, বৈদ্যুতিক ইীিটার হতে
তাপ বিকিরণ- এসবই বিদ্যুতের তাপীয় ফল ।
2. চুম্বকীয় ফল (Magnetic Efect) ঃ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে পরিবাহীর চারদিকে চৌম্বক-ক্ষেত্রের সৃটি হয়, অর্থাৎ
বৈদ্যুতিক শক্তি চৌম্বক শক্তিতে রূপান্তরিত হয় । উদাহরণঃ এ তত্ত্ব কাজে লাগিয়ে
বৈদ্যুতিক ঘন্টাজেনারেটর, মোটর,
ইত্যাদি চালানো হয় ।
3. রাসায়নিক ফল (Chemical Efect)ঃ যদি কোন যৌগিক পদার্থের দ্রবণে বিদ্যুৎ
প্রবাহিত করানো হয়, তবে উক্ত দ্রবণটি বিশ্লেষিত হয় । এ বিশ্লেষণকে বৈদ্যুতিক বিশ্লেষণ বা Chemical Efect বলে । অনুমিশ্রিত
পানিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করালে উক্ত পানি হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনে বিশ্লিষ্ট হয়।
অর্থাৎ বৈদ্যুতিকশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা
যায়,ইলেকট্রোপ্লেটিং (Electropilating) এ ক্রিয়ার ফল ।
নেগেটিভ এবং পজেটিভ
চার্জ (Positive and Negative charge)ঃ
স্বাভাবিক অবস্থায়
একটি বস্তু নিরপেক্ষ, যেহেতু এটাতে সমান সংখ্যক প্রোটন এবং ইলেকট্রন থাকে,
যাতে
প্রোটনসমূহের মোট পজেটিভ চার্জ ইলেক্ট্রনসমূহের মোট নেগেটিভ চার্জকে নিরপেক্ষ করে
তুলে। যদি কোনভাবে এরূপ একটি নিরপেক্ষ বস্তু হতে কিছুসংখ্যক ইলেট্রনকে সরানো যায়,
তবে সেখানে ইলেকট্রনের ঘাটতি দেখা দেয় এবং বস্তুটি পজেটিভচার্জযুক্ত হয়।
অনাদিকে
যদি নিরপেক্ষ বস্তুটিতে আরো ইলেকট্ৰন যোগ করা হয়, তবে এতে ইলেকট্রন বাড়তি হয়
এবং বস্তুটি নেগেটিভচার্জ যুক্ত হয়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে
যে, একটি চার্জযুক্ত বস্তুতে ইলেকট্রন হয় বাড়তি, নয়তো ঘাটতি দেখা দেয়।
বিদ্যুৎ দু’ধরনের হয়, যথা ঃ
১।
স্থির বিদ্যুৎ বা Static Electricity.
২।
চলমান বিদ্যুৎ বা Current Electricity.
১। স্থির বিদ্যুৎঃ ঘর্ষণের ফলে সৃষ্ট
বিদ্যুৎ কেই স্থির বিদ্যুৎ বলে। এ বিদ্যৎ সকল বস্তুতে একই ধরনের হয় না, একেক বস্তুতে
একেক ধরনের বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় । যেমন :
(ক)
রেশমী কাপড়ের সাহায্যে একটা কাঁচদগুকে ঘষলে এক ধরনের বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
(খ)
আবার ফ্রানেল কাপড়ের সাহায্যে একটি এবোনাইট দগুকে ঘষলে অন্য ধরনের বিদ্যুৎ উৎপন্ন
হয় ।
আমরা
কীভাবে বুঝব যে দুটিতে দুধরনের বিদ্যুৎতের সৃষ্টি হয়েছে? উপরোক্ত দণ্ড দুটিকে যদি
সুতার সাহায্যে ঝুলিয়ে কাছাকাছি
আনা
যায়, তবে দেখা যাবে যে, দণ্ড দু'টি পরস্পরকে আকর্ষণ করছে । আবার উপরোক্ত দু'টি
দগুকে একই কাপড়ে ঘষে সুতার
সাহায্যে
ঝুলিয়ে কাছাকাছি আনলে পরস্পরকে বিকর্ষণ করবে । অতএব, দু'ধরনের। বিদ্যুতের
অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে।এর এক প্রকারের বিদ্যুৎকে ধন্তাক বিদ্যুৎ বা Positive Electricity এবং অন্য প্রকারের বিদ্যুৎকে ঋন্তাক বিদ্যুৎ বা Negative Electricity বলা হয় ।।
এ
বিদ্যুৎ যে স্থানে উৎপন্ন হয়, সে স্থানেই রয়ে যায়—কোন ক্রমেই উৎপন্ন-স্থান
ত্যাগ করে না। তাইতে এর নামকরণ করা
হয়েছে
স্থির বিদ্যুৎ
২। চলমান বিদ্যুৎ ঃ এক কথায় বলতে
গেলে বলা যায়, যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন-স্থানে স্থির না থেকে আলো, চাপ, তাপ বা আবেশের কারণে পদার্থের মধ্য দিয়ে ধাবিত হয়, তা চলমান বিদ্যুৎ বা Current
Electricity। পদার্থের প্রতিটি অ্যাটমের ভিতর ইলেকট্রনসমূহ তাদের নির্দিষ্ট
কক্ষপথে আবর্তিত হচ্ছে এবং কোন কোন পদার্থের অ্যাটমের মুক্ত-ইলেকট্রনসমূহ (Free
Electrons)বা ঋন্তাক বিদ্যুৎ-কণিকা বা চার্জসমূহ প্রতিনিয়তই
অনিয়মিতভাবে ঘোরাফেরা করে । যদি কোন শক্তির সাহায্যে (যথাঃ আলো,তাপ,
চাপ,
আবেশ) এদেরকে উত্তেজিত করে সুশৃংখলভাবে একটি নির্দিষ্ট অভিমুখে প্রবাহিত করানো
যায়, তবে উক্ত পদার্থের মধ্যে অসংখ্য ইলেকট্রনের স্রোত বইতে থাকবে । ঐ ইলেকট্রনের
স্রোতকে চলমান বিদ্যুৎ বা current Electricity বলা যায় । সুতরাং আমরা বলতে পারি
যে,
চলমান
বিদ্যুৎ বা চল বিদ্যুৎ দুই প্রকার-
(ক)
একমুখী প্রবাহ (Direct Current বা DC)
(খ) পরিবর্তী প্রবাহ (Alternating Current বা AC) ।
(ক) একমুখী প্রবাহ ঃ
যে কারেন্টের মান ও দিক সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় না, তাকে একমুখী প্রবাহ বলে।
খ) পরিবর্তী প্রবাহ ঃ যে কারেন্টের মান ও দিক সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়, তাকে পরিবর্তী প্রবাহ ।
প্রশ্ন ও উত্তরঃ
১। বিদ্যুৎ কি? কত প্রকার এবং কি কি?
উত্তরঃ বিদ্যুৎ এমন এক অদৃশ্য শক্তি যা আলো, শব্দ, গতি এবং রূপান্তরিত
শক্তি ইত্যাদি উৎপন্ন করে বিভিন্ন বাস্তব কাজ সমাধা করে।
বিদ্যুৎ ২(দুই) প্রকার। (i) স্থির বিদ্যুৎ (ii) চল বিদ্যুৎ
২। কারেন্ট কি? কত প্রকার এবং কি কি?
উত্তরঃ পদার্থের মধ্যকার মুক্ত ইলেকট্রনসমূহ কোন নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত
হওয়ার হারকে কারেন্ট বলে। কারেন্টের প্রতীক I (আই) এবং একক
Ampere (অ্যাম্পিয়ার), সংক্ষেপে ‘A’ লেখা হয় । কারেন্ট পরিমাপের যন্ত্রের নাম
Ampere Meter (অ্যাম্পিয়ার মিটার)।
কারেন্ট ২(দুই) প্রকার। (i) AC (এসি)(Alternative Current) কারেন্ট (ii)
DC (ডিসি) কারেন্ট (Direct Current)
৩। অ্যাম্পিয়ার কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন পরিবাহীর যে কোন অংশের মধ্য দিয়ে এক কুলাম্ব চার্জ এক সেকেন্ড
সময় ধরে প্রবাহিত হলে উক্ত পরিমান চার্জকে এক অ্যাম্পিয়ার বলে। ১ কুলাম্ব =
628×1016 ইলেকট্রন চার্জ।
৪। ভোল্টেজ কি? ভোল্টেজ কিভাবে পাওয়া যায়?
উত্তরঃ পরিবাহির পরমানুগুলোর ইলেকট্রনসমূহকে স্থানচ্যুত করতে যে বল বা
চাপের প্রয়োজন তাকে বিদ্যুৎ চালক বল বা ভোল্টেজ বলে। ভোল্টজ এর প্রতীক V(ভি) এবং
একক Volt (ভোল্ট)। ভোল্টেজ পরিমাপের যন্ত্রের নাম Volt Meter(ভোল্ট মিটার)।
পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স ও এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট এর গুণফল হল
ভোল্টেজ।
অর্থাৎ V = IR [ভোল্টেজ = কারেন্ট X রেজিস্ট্যান্স]
৫। রেজিস্ট্যান্স কি?
উত্তরঃ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহের সময় পরিবাহী পদার্থের যে
ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যের কারণে তা বাধাগ্রস্থ হয় তাকে রেজিস্ট্যান্স বলে।
রেজিস্ট্যান্স’এর প্রতীক R (আর) এবং একক Ohm (ওহম)।
৬। Capacitance (ক্যাপাসিট্যান্স) কি? এর
প্রতীক এবং একক কি?
উত্তরঃ ক্যাপাসিটরের প্লেটগুলোর মধ্যে কোন বিভব পার্থক্য থাকলে প্লেটগুলো
বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয় করে রাখে (অর্থাৎ চার্জ ধরে রাখে)। ক্যাপাসিটরের এই ধর্ম বা
বৈশিষ্ট্যকে ক্যাপাসিট্যান্স (Capacitance) বলে। ক্যাপাসিট্যান্স এর প্রতীক C (সি)
এবং এর একক F (Farad) বা µF (Micro Farad)। পরিমাপের যন্ত্র Ohm মিটার বা
ক্যাপাসিট্যান্স মিটার ।
৭। Inductance (ইন্ডাকট্যান্স) কি ? এর
প্রতীক এবং একক কি?
উত্তরঃ এটি কয়েলের এমন একটি বিশেষ ধর্ম যা কয়েলে প্রবাহিত কারেন্টে-এর
হ্রাস বা বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। ইন্ডাকট্যান্স’এর প্রতীক L এবং এর একক Henry ।
৮। ফ্রিকুয়েন্সী
(Frequency) কাহাকে বলে?
উত্তরঃ এক সেকেন্ড
সময়ে
যতগুলো
সাইকেল
সম্পন্ন
হয়
তাকে
ফ্রিকুয়েন্সী
বলে।
এর প্রতীক f এবং
একক
সাইকেল/সেকেন্ড (C/S)