Conductors & Insulators
বিষয়:বেসিক ইলেকট্রিসিটি
Part- 2
কন্ডাক্টর বা পরিবাহী (Conductor)ঃ যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে
সহজেই কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে, বিশেষ কোন বাধার সম্মুখীন হয় না, তাদেরকে বিদ্যুৎ
পরিবাহী বা কন্ডাক্টর বলে।
সাধারণতঃ সকল ধাতব পদার্থই পরিবাহী বলে বিবেচিত । এ ছাড়াও মাটি , কয়লা,
প্রাণিদেহ পরিবাহীর কাজ করে। ।
ইনসুলেটর বা অপরিবাহী
(Insulator)ঃ ও যে সকল পদার্থের
মধ্য দিয়ে সহজেই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে না, প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয় তাদেরকে অপরিবাহী,অন্তঃরক বা অপরিবাহী বলে।
যেমন ঃ রাবার, কাগজ, শুকনো কাঠ, কাচ প্রভৃতি অপরিবাহী বা ইনসুলেটর হিসেবে কাজ
করে ।
কন্ডাক্টর এবং
ইনসুলেটরের ইলেকট্রন তত্ত্বের ব্যাখ্যা (Explanation of electron theory of conductors and insulators) ঃ
ইলেকট্রন-তত্ত্ব অনুযায়ী কনডাকটর এবং ইনসুলেটর ব্যাখ্যা করার আগে দু ' একটি
বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা
মুক্ত ইলেকট্রন
(Free Electron) ঃ আমরা জানি, একটি অ্যাটম বা পরমাণুর নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে
বিভিন্ন কক্ষপথে ইলেকট্রনসমূহ ঘুরে বেড়ায় । নিউক্লিয়াসের নিকটবর্তী কক্ষপথগুলোর
ইলেকট্রনসমূহ নিউক্লিয়াসের সাথে শক্ত বাধনে বাধা থাকে ।
নিউক্লিয়াস হতে কক্ষপথ যত দূরে হবে, এর ইলেকট্রনসমূহের বন্ধন কেন্দ্রের সাথে
তত শিথিল হতে থাকবে এবং সর্বশেষ কক্ষপথের ইলেকট্রনসমূহ (যাদেরকে ভ্যালেন্স-ইলেট্রন
বলে) কেন্দ্রের (নিউক্লিয়াস) সাথে অত্যত্ত শিথিলভাবে আবদ্ধ থাকে । ফলে এরা খুব সহজেই
কক্ষচু্্যত হয়ে পড়ে। এ ধরনের ইলেকট্রনসমূহকে
মুক্ত ইলেকট্রন বা Free Electron বলে ।
( একটি অ্যাটম বা পরমাণুর যে সকল ভ্যালেন্স
ইলেকট্রনসমূহ নিউক্লিয়াসের সাথে অত্যন্ত আলগা বন্ধনে আবদ্ধ থাকে,
উক্ত ইসেকনসমূহকে মুক্ত ইলেক্ট্রন বলে।)
যে সকল পদার্থে মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বেশি, সে সকল পদার্থই ভাল পরিবাহী
বলে বিবেচিত । যেমন- তামার এক ঘন সেন্টিমিটার একটি টুকরোতে স্বাভাবিক তাপমাত্রায়
(Room temperature) প্রায় 8.5 x 1022 সংখ্যক মুক্ত ইলেকট্রন থাকে ।
ব্যাখ্যা ঃ ইলেকট্রনের
প্রবাহই যদি বৈদ্যুতিক কারেন্ট হয়, তবে যে সকল পদার্থে মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বেশি,
সে সকল পদার্থই পরিবাহী বা কনডাকটর । কারণ যখন সামান্য কারণে যেমন- আলো,চাপ, তাপ, আবেশী
ইলেকট্রনগুলো উত্তেজিত হয়,
তখন মুক্ত ইলেকট্রনগুলোও তাদের নিজস্ব কক্ষপথ ছেড়ে পার্থের পরমাণুর কক্ষপথে
স্থান গ্রহণ করে। ফলে অসংখ্য ইলেক্ট্রনের স্রোত বইতে থাকে এবং এ স্রোতই কারেন্ট । ঐ
পদার্থটিকে পরিবাহী বা কনডাকটর বলে
। কাজেই আমরা বলতে পারি,
( যে সকল পদার্থে প্রচুর
সংখ্যক মুক্ত-ইলেক্ট্রন
থাকার কারণে অতি সহজেই কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বা কনডাকটর বলে।)
বদ্ধ-ইলেকট্ৰন
(Bound Electron) ঃ
কোন কোন পদার্থের পরমাণুর সর্বশেষ কক্ষপথের ইলেকট্রনসমূহ নিউক্লিয়াসের সাথে
দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থাকে,
সহজে কক্ষচ্যুত হয় না বা
কোন সময়ই কক্ষচ্যুত হয় না, এদেরকে বদ্ধ-ইলেকট্রন বা Bound Electron বলে ।
( যে সকল পদার্থে অতি অল্প সংখ্যক মুক্ত ইলেকট্রন থাকে অর্থাৎ প্রচুর সংখ্যক বন্ধ-ইলেকট্রন
থাকার কারণে সহজেই কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না, প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয়, এদেরকে অপরিবাহী, বা অন্তরক বা ইনসুলেটর বলে।)
অধ-পরিবাহী
বা সেমিকনডাকটর (Semi-Condutor)ঃ
সেমিকনডাকটর পদার্থ সেগুলো,
যাদের বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম কু-পরিবাহী বা
ইনসুলেটর ও সুপরিবাহী বা গুড কনডাকটরের মাঝামাঝি।
সেমিকনডাকটর আবার দু'ধরনের, যথা :
১ । বিশুদ্ধ বা নির্ভেজাল সেমিকনডাকটর, যথা ঃ জার্মেনিয়াম, সিলিকন;
২। ভেজালযুক্ত সেমিকনডাকটর, যথা ঃ গ্যালেনিয়াম, ইনডিয়াম, বোরন, আরসেনিক
অ্যান্টিমনি, ফসফরাস ইত্যাদি ।
কন্ডাক্টর এবং ইনস্যুলেটর
যে সকল
উপাত্তের উপর পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স নির্ভরশীল (The factor upon which the resistance of a conductor depends
and Law of resistance) ঃ
একটি পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স অনেকগুলো উপাত্তের উপর নির্ভর করে এবং উহারা
যে ‘নিয়ম' দ্বারা পরিচালিত, সে নিয়মগুলো
‘রেজিস্ট্যান্স সূত্রাবলীহিসেবে পরিচিত। যদি তাপমাত্রা
স্থির থাকে, তবেই নিম্নে প্রদত্ত সূত্রাবলী প্রযোজ্য হয় ।
(ক) প্ৰথম সূত্ৰ ঃ একটি পরিবাহীর
রেজিস্ট্যাপ উহার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক, যদি প্রস্থচ্ছেদ স্থির থাকে; অর্থাৎ R ~ L.
(খ) দ্বিতীয় সূত্রঃ একটি পরিবাহীর
রেজিস্ট্যান্স উহার ক্ষেত্রফলের উল্টানুপাতিক, যদি দৈর্ঘ্য স্থির থাকে, অর্থাৎ R ~( 1/A )
.
(গ) তৃতীয় সূত্রঃ পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স
এর উপাদানের উপর নির্ভরশীল, যদি দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থচ্ছেদ একই হয়, অর্থাৎ উপাদানের
আপেক্ষিক
রেজিস্ট্যান্সের [ p(rho) ] উপর ।
উপরোক্ত উপাত্তগুলো ছাড়াও পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স উহার তাপমাত্রা, ঘনতা,বিশুদ্ধতা
এবং কাঠিন্যের উপরও নির্ভর করে ।
প্রমান R = p ( L/A ) ঃ
(ক)
R ~ L.
(খ)
R ~ ( 1/A ).
উপরোক্ত দুটি সূত্র একত্রিত করলে আমরা পাই,
R ~ ( L/A ).
অথবা, R = p ( L/A ).
ও এখানে p [রো, একটি গ্রীক অক্ষর] একটি ধ্রুব এবং এর
মান পরিবাহী পদার্থের উপর নির্ভর করে । একে পদার্থের আপেক্ষিক রোধ বা স্পেসিফিক
রেজিস্ট্যান্স বা রেজিস্টিভিটি বলে ।
প্রশ্ন ঃ
১। Conductor (কন্ডাকটর) বা
পরিবাহী
কি?
উত্তরঃ যেসব পদার্থের
মধ্য
দিয়ে
কারেন্ট
চলাচল
করতে
পারে
তাদের
Conductor বা পরিবাহী বলে।
যেমনঃ
সোনা,
রূপা,
তামা,
লোহা,
অ্যালুমিনিয়াম।
২। Insulator (ইন্সুলেটর) বা
অপরিবাহী
কি?
উত্তরঃ যে সকল
পদার্থের
মধ্য
দিয়ে
সরাসরি
কারেন্ট
চলাচল
করতে
পারে
না
তাদের
Insulator বা অপরিবাহী বলে
।
যেমনঃ
প্লাষ্টিক,
রাবার
ইত্যাদি।
৩। Semi-Conductor (সেমি-কন্ডাকটর) বা
অর্ধপরিবাহী
কি?
উত্তরঃ যে সকল
পদার্থের
মধ্য
দিয়ে
বেশি
নয়
সামান্য
পরিমানে
বিদ্যুৎ
চলাচল
করে
অর্থাৎ
অবস্থা
ভেদে
কখনো
বিদ্যুৎ
চলাচল
করে
আবার
চলাচল
করেনা
তাদের
Semi–Conductor বা অর্ধপরিবাহী বলে।
যেমনঃ
জার্মেনিয়াম,
সিলিকন
ইত্যাদি।
৪। পরিবাহীর রোধ বা রেজিস্ট্যান্স কী
কী বিষয়ের উপর নির্ভরশীল ?
উত্তর ঃ পরিবাহীর রোধ যে সব বিষয়ের উপর নির্ভরশীল
তা নিমে দেওয়া হল-
(i) পরিবাহীর দৈর্ঘ্যের উপর,
(ii) পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের উপর,
(iii) তাপমাত্রার উপর,
(iv) পরিবাহী পদার্থের ঘনত্বের উপর,
(v) পরিবাহী পদার্থের বিশুদ্ধতার উপর,
(vi) পরিবাহী পদার্থের কাঠিন্যের উপর ।